নিউজ ডেস্ক:
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের চার শীর্ষ কর্মকর্তার দোষী সাব্যস্তকরণ ও সাজা রায় স্থগিত করে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশ বাতিল ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ রায় দেন।
রায়ে আদালত বলেছেন, আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চারজনের বিরুদ্ধে দেওয়া কনভিকশন কার্যকর থাকবে। ড. ইউনূসসহ চারজন কর্মকর্তাকে জামিন দেওয়া হয়েছে। তাই সাজা স্থগিত আছে। যতক্ষণ তাঁরা জামিনে আছেন, সাজা এবং শ্রম আদালতের দেওয়া জরিমানা স্থগিত থাকবে। রায়ে বাস্তবায়নযোগ্য নির্দেশনা আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। আপিল ট্রাইব্যুনাল দ্রুত আপিল নিষ্পত্তি করবেন। দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য ড. ইউনূসসহ চারজন কর্মকর্তাকে সংশ্লিষ্ট আদালতকে জানাতে হবে।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত গত ১ জানুয়ারি ৬ মাসের সাজা দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার আসামিকে। তাদেরকে ছয় মাস করে কারাদণ্ড এবং ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। সাজাপ্রাপ্ত অপর তিনজন হলেন, গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ড. ইউনূস, গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলাটি করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের করা এই মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত। এ ছাড়া প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। গত ১ জানুয়ারি এই রায় দেওয়া হয়। রায়ের বিরুদ্ধে গত ২৮ জানুয়ারি আপিল করেন ড. ইউনূসসহ চারজন। শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল এই আপিল সেদিন শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। তৃতীয় শ্রম আদালতের দেওয়া রায় ৩ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করে চারজনকে জামিন দেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল।
এ অবস্থায় তৃতীয় শ্রম আদালতের রায় ও আদেশ স্থগিত করে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশের অংশবিশেষের বৈধতা নিয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে আবেদন (ক্রিমিনাল রিভিশন) করেন মামলার বাদী।
বাদী কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শকের করা এই আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। রুলে তৃতীয় শ্রম আদালতের ১ জানুয়ারি দেওয়া রায় ও আদেশের কার্যক্রম স্থগিত করে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের ২৮ জানুয়ারি দেওয়া আদেশ কেন বাতিল হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। রুলের ওপর ৬ মার্চ শুনানি শুরু হয়। রুলের ওপর ১৪ মার্চ শুনানি শেষে আদালত ১৮ মার্চ রায়ের জন্য তারিখ ধার্য করেন। কয়েকটি দিক বিবেচনায় রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে আজ রায় দেওয়া হয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। ড. ইউনূসসহ চারজনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী খাজা তানভীর আহমেদ।
Leave a Reply